মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটের গডফাদারদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সাগরে ভাসমান ও বিদেশের কারাগারে আটক বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসন, পাচারের শিকার নিখোঁজ-নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতন্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ২৩ মে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এ দিন বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি কমরেড সীমা দত্ত।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার উন্নয়নের ফিরিস্তি দিচ্ছে, আর একটু কাজের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রপথে পাচারকারীদের হাতে নিজেদের সঁপে দিচ্ছে। তারা সাগরে ডুবে মরছে, খাবারের অভাবে মরছে, পানির অভাবে মরছে। নয়তো তাদের ঠিকানা হচ্ছে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবর অথবা বিভিন্ন দেশের কারাগার। সমুদ্র-স্থল-আকাশ সব পথেই মানবপাচার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এবং এ সবই ঘটছে প্রশাসনের নাকের ডগায়, ক্ষমতাসীন শাসক দলের নেতা ও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এক দিন দু’দিন নয়, বছরের পর বছর ধরে এই মানব পাচার চলছে। একশ দুশ নয়, লক্ষ লক্ষ মানুষ, নারী-শিশু দেশ থেকে পাচায় হয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ দেশে কাজ নেই, জীবনের সামনে কোনো ভবিষ্যত নেই। কর্মহীন অসহায় মানুষ পাচারকারীদের খপ্পরে গিয়ে পড়েছে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ঘটনা থেকে এটা অত্যন্ত পরিস্কার হয়েছে যে দেশের গরিব শ্রমজীবী মানুষের পাশে কখনোই শাসক দলগুলো দাঁড়ায় নি। এরা দেশের মধ্যে কাজের ব্যবস্থা করেনি, মানুষের নিরাপত্তাও তারা দিতে পারেনি। এই মানব পাচারের দায় সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই নিতে হবে।
সমাবেশ থেকে যেসকল পরিবারের সদস্য পাচারের শিকার হয়েছে তাদের খুঁজে বের করে যথোপোযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন, সাগরে ভাসমান ও কারাগারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা ও পুনর্বসানের দাবি জানানো হয়।