বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর সংগঠিত ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বর্বরোচিত পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি দুপুর সাড়ে ১২টায় মধুর কেন্টিন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে কলাভবনের গেটে সমাবেশে মিলিত হয়।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইভা মজুমদার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এই অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের যে সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেছে তার প্রতিবাদে সারাদেশের ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছে। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারাদেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাজপথে নেমে এসে এই অযৈক্তিক, অন্যায্য সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। গত দুই মাস ধরে এই আন্দোলন চললেও সরকার শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদকে গ্রাহ্য করেনি। বরং পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে, গুলি চালিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আহত করেছে।’
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘১৯৯২ সালে শুধুমাত্র ব্যবসার উদ্দেশ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। আজ এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকরা হাজার হাজার কোটি টাকা শিক্ষার্থীদের কাছে হাতিয়ে নিচ্ছে। এবারের অর্থবছরে তাই বলা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের লভ্যাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট দেবে। কিন্তু বাস্তবে মালিকরা নয় বরং শিক্ষার্থীদেরই বাধ্য করা হলো এই বাড়তি অর্থ দিতে। এই ভ্যাট বসানো হয়েছে তাদেরই উপর যারা একটি সার্টিফিকেটের জন্য সহায়-সম্বল, ভিটে-মাটি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে। এই সরকার কতটা ছাত্রস্বার্থ বিরোধী তা এই পদক্ষেপের মাধ্যমেই বোঝা যায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপরও। সরকার যদি এই জনবিরোধী সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারে তবে সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রমে বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণের ধারা আরও তীব্রতর হবে।’
তাঁরা আরও বলেন, ‘ ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজিউল্লাহসহ আরও অনেকে। পরাধীন দেশে পাকিস্তানি শাসকদের শিক্ষা সম্পর্কিত যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং যে কায়দায় তাকে দমন করতে চেয়েছে আজ ২০১৫ সালে একই কায়দায় সরকার শিক্ষা আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত, এভাবে আন্দোলনকে দমানো যায় বরং দমন-পীড়ন চালালে আন্দোলন আরও তীব্রতর হয়। ইতিহাস তার সাক্ষী।’
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন এবং শিক্ষার্থীদের উপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট বাতিলের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।