ধারাবাহিকভাবে লেখক মুক্তচিন্তার মানুষ ও প্রকাশক হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং বিচারহীনতা ও সরকারের দায়িত্বহীনতার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-লেখক-পাঠক-প্রকাশক ও নাগরিকবৃন্দের উদ্যোগে প্রেসক্লাব চত্বরে ৭ নভেম্বর ২০১৫ এক প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবুল মনসুর, বিশিষ্ট লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীম, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বব্যিালয়ের শিক্ষক রিগ্যান মজুমদার, মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, শিক্ষক আমিরুর ইসলাম, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতি ও বলাকা’র স্বতাধীকারী জামাল উদ্দীন, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সভাপতি শাহ আলম নিপু, আইনজীবী মুজিবুল হক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতা ফরহাদ জামান জনি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সত্যজিত বিশ্বাস, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা, কবি অরণ্যক টিটু, স্বরূপ সুপান্থ, বই পড়ুয়া গ্রুপের হিল্লোল দত্ত।
সমাবেশে অধ্যাপক আবুল মনসুর বলেন, স্বাধীন দেশে এই সময়ের মত চরম নিরাপত্তাহীণতা আর কখনো অনুভব করি নি। ভয় এবং নির্বিকারত্ব কাটিয়ে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। বক্তারা বলেন, ‘দেশে ঘোষণা দিয়ে একের পর এক মুক্ত চিন্তার লেখক, বুদ্ধিজীবী, প্রকাশকদের গুপ্তহত্যা করা হচ্ছে কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি কোথায় গেছে তা আজ বোঝা যায় যখন সন্তানহারা বাবা আর বিচার দাবি করেন না। সরকার প্রধান বেডরুমে নিরাপত্তা দিতে পারবেন না বলেছিলেন, কিন্তু এখন নিরাপত্তা কোথায় আছে? প্রকাশ্য লোকালয়, অফিস, বাসায় খুনিরা হত্যা করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাচ্ছে। অন্ধকারের এ অপশক্তি আজ এ শক্তির উৎস কোথায়? সরকারের চরম দায়িত্বহীনতা এবং বিচার না হওয়া এভাবে এক পরএক হত্যাকান্ড ঘটতে পারছে। বক্তারা স্বরাষ্টমন্ত্রীর বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিচ্ছিন্ন হত্যাকান্ড বলে তিনি ব্যর্থ ডাকার চেষ্টা করছেন। আর এতে উৎসাহিত হচ্ছে ধর্মান্ধ খুনিরা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, খুন করা এদেশে অপরাধ নয়, চিন্তা প্রকাশ করাই যেন অপরাধ। ক্ষমতা গদি রক্ষার জন্য রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার করে, ধমার্ন্ধ মৌলবাদী শ্রেণিকে লালন পালন করে কখনো এসব হত্যাকান্ড থামানো যাবে না। এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতে আজ সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।