Sunday, April 28, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদসুমাইয়া হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

সুমাইয়া হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

SAM_2744লালবাগের হালিমা সাদিয়া মহিলা মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার হত্যার সাথে জড়িত মাদ্রসা কর্তৃপক্ষ মোজাম্মেল হক সহ দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ -মিছিল-মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত
এলিফ্যান্ট রোড এলাকাবাসীর  উদ্যোগে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-মিছিল-মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল এলিফ্যান্ট থেকে শুরু হয়ে কাঁটাবন-নীলক্ষেত মোড়-টিএসসি-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট মোড় দিয়ে প্লেসক্লাবে এসে সমাপ্ত হয়। বিক্ষোভ-মিছিল-মানববন্ধন ও সমাবেশ সভা পরিচালনা করেন- নারীমুক্তি কেন্দ্র ঢাকা নগর শাখার সভাপতি এডভোকেট সুলতানা আক্তার রুবি। সমাবেশে সুমাইয়া হত্যার বিচার ও হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বক্তব্য রাখেন সুমাইয়ার মা পেয়ারা বেগম। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এলাকাবাসী ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর সরকারি  কর্মচারি সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ওসমান আলী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুলহাস মিয়া, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম -এর সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু, শিশু-কিশোর মেলার সংগঠক নাঈমা খালেদ মনিকা। এছাড়াও এলাকাবাসীর পক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন মো: লোকমান  হোসেন, দাদী আছিয়া বেগম,  মো: নিজাম, ফুফাতো ভাই ইব্রাহীম মিয়া, এলাকার বড় বোন শারমিন আক্তার। উপস্থিত ছিলেন বাবা মোবারক আলী। সমাবেশ আরো সংহিত জানিয়েছেন শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর আহবায়ক বহ্নিশিখা জামালী।
সমাবেশে সুমাইয়ার বাবা-মা বলেন, আমার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মাত্র এক মাস আগে হালিমা সাদিয়া মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি হয় এবং ১১ সেপ্টেম্বর লাশ হয়ে আমাদের কাছে ফিরল। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমার শিশুকে দেহ-মনে বিকশিত করবে সেই মাদ্রাসা আমার কাছে মৃত্যুকূপ। আবাসিক মাদ্রাসায় আমার ১১ বছরের  মেয়ে  কি করে হত্যার শিকার হল তার দায়-দায়িত্ব ঐ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই এই দায় এড়াতে পারে না। সেজন্য আমি ঐ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষসহ হত্যার  সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবী করছি। অন্যদিকে সুমাইয়ার হত্যার প্রকৃত কারণ পুলিশ উৎঘাটন না করে তাকে আত্মহত্যা বলে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা অবিলম্বে বন্ধ করে হত্যা মামলা দায়ের ও  সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন- যে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের হেফাজতে সুমাইয়া মারা গেছে অথচ মাদ্রাসার পরিচালক মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তিনি সুমাইয়ার পরিবারের সাথে কোনরূপ যোগাযোগ করেননি, ঘটনার কোন ব্যাখ্যা দেননি। ওই দিনের পর থেকে তিনি কয়েক দিন আতœগোপন করে ছিলেন।  আর মাদ্রাসার একাউটেন্ট আজিজ বলেছেন আবাসিক শিক্ষক সালমা ও হাজেরা বেগম তারা দুজনেই ভোরে মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেছেন। এই সকল অঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্যই প্রমাণ করে যে আমার বোন আত্মহত্যা করেনি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষই সুমাইয়ার  মৃত্যুর কারণ। সেজন্য আমরা অবিলম্বে মাদ্রাসা কর্র্তৃপক্ষসহ সকল দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, লালবাগ থানায় যে অভিযোগপত্র লেখা হয়েছে, যেখানে সুমাইয়ার বাবার স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে এবং এই অভিযোগপত্রে সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ আছে। কিন্তু বাস্তবে পুলিশের লেখা ছিল ঐ অভিযোগপত্র। বাবা যখন  মেয়ের মৃত্যুশোকে দিশেহারা তখন পুলিশ ঐ অভিযোগপত্র লিখে স্বাক্ষর নিয়েছে। সুমাইয়ার  বাবা সুস্থ মস্তিষ্কে এই বক্তব্যে স্বাক্ষর করেনি। অভিযোগপত্র নিয়ে পুলিশের এই টালবাহানা প্রত্যাখ্যান করা হয়। তাছাড়া পুলিশ এই ঘটনার জন্য এখনও পর্যন্ত  কাউকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি এবং যথাযথ তদন্ত চালায়নি। বরং সুরতহাল রিপোর্টে সঠিকভাবে লেখা হয়নি। পুলিশের ভূমিকা আমাদের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। সেজন্য পুলিশের মাধ্যমে এই মামলা পরিচালিত হলে আমরা যথাযথ বিচার পাব না।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টও পুলিশের কাছে জমা পড়েছে। মাত্র চারদিনের মাথায় তাড়াহুড়া করে তৈরি করা এই রিপোর্টে সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টের এই বক্তব্যও প্রত্যাখান করে বক্তারা। এবং পুনঃরায় ময়নাতদন্ত করা হোক এবং সুমাইয়ার মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করা হোক বলে বক্তারা জানায়।
এছাড়া বক্তারা বলেন , সুমাইয়ার বাবা-মার বুক খালি হয়েছে, আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয় সেজন্য এই আন্দোলন। সুমাইয়া ফিরে আসবে না একথা ঠিক কিন্তু সুমাইয়া বিচার চেয়ে যে আন্দোলন তা আমাদের সকলের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে যে এভাবে আর শিশুর মৃত্যু হতে দিব না।  খিলগাঁয়ের নন্দীপাড়ার উম্মে কুলসুম রিতুর মা-বাবাও কাঁদছে। কারণ রিতুকে হারিয়ে তার বাব-মা এখন দিশেহারা। অথচ রিতুর হত্যাকারী প্রধান আসামী শিমুলকে এখনও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। তাই সুমাইয়া ও কুলসুম হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবী জানাই এবং সুমাইয়া হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে পুনঃময়নাতদন্ত চাই।
RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments