Thursday, May 2, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদতিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার আহ্বান — বাসদ (মার্কসবাদী)

তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার আহ্বান — বাসদ (মার্কসবাদী)

11001732_1608320462722962_3392034872380181637_n
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন সকল জমিতে পানির দাবিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চের কর্মসূচী দিয়েছে। এই কর্মসূচী সফল করার লক্ষ্যে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টায় জি.এল.রায় রোডস্থ সাম্যবাদ কার্যালয়ে বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর বিভাগীয় সংগঠক কমরেড মঞ্জুর আলম মিঠু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, রাজশাহী বিভাগীয় সংগঠক কমরেড ওবায়দুল্লাহ মুসা, রংপুর জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক কমরেড রেজাউল ইসলাম সবুজ, রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভারত সরকার আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লংঘন করে বাংলাদেশের প্রায় সব কয়টি নদীর উজানে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে। ফলে সেচ মওসুমে তীব্র পানি সংকট, আবার বর্ষা মওসুমে ভয়াবহ বন্যা বাংলাদেশের জন্য প্রতি বছরের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম নদী তিস্তার উজানে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে শুকনো মওসুমে ভারত কর্তৃক একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে আমাদের দেশের নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সহ গোটা উত্তরাঞ্চল আজ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি, মরুকরণের ঝুঁকিতে সমগ্র অঞ্চল। তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন ১ লক্ষ ১১ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমির বেশীর ভাগই গত বছর সেচ সুবিধা পায়নি। গত বছর যতটুকু পেয়েছিল এবছর তাও নেই। বর্তমানে তিস্তা সেচ প্রকল্পের অধীনে কোন জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। বিকল্প আয়োজন যারা করছে, তাদের বিঘা প্রতি বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে প্রায় ২৫০০(দুই হাজার পাঁচশত) টাকা। যাদের বিকল্প আয়োজনের সামর্থ নেই তারা পড়ছে বিপাকে। অন্যদিকে বর্ষা মওসুমে ভারত বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়, যার ফলে বিপুল পানির স্রোতে ঘর-বাড়ী, ফসলের ক্ষেত ডুবে যায়। নদীর ভাঙ্গনে চাষের জমি, বসতবাড়ী, হাট-বাজার, স্কুল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ফলে তিস্তা আজ আমাদের আশির্বাদ না হয়ে হয়েছে অভিশাপ।

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র পথ তিস্তাসহ অভিন্ন সকল নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়। কিন্তু আমাদের নতজানু শাসক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর জোট এবং মহাজোট কেউই পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি। ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রয়োজনে সরকার পক্ষ জনগণের সকল মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। অপর দিকে বিরোধী পক্ষ যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সহিংসতা, গুপ্ত হামলা, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদির মাধ্যমে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলছে। প্রতিদিন মানুষ মরছে, হয় ক্রসফায়ারে না হয় আগুনে পুড়ে। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে গোটা দেশে অপরাধমূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। জোট-মহাজোটের উপর নির্ভর করে জনজীবনের কোন সংকট যেমন সমাধান সম্ভব নয়, তেমনি পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করাও সম্ভব নয়। গণ আন্দোলনের পথে জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রামই পারে শাসক গোষ্ঠিকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে বাধ্য করতে।

এই প্রেক্ষাপটে বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের উদ্যোগে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ ধরণের কর্মসূচি পালন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও উত্তরাঞ্চলের মরুকরণ রোধ ও কৃষি-কৃষক, প্রাণ-প্রকৃতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার প্রয়োজনে রোডমার্চ কর্মসূচি ঐ নির্দিষ্ট দিনে পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচিতে আমরা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন, সক্রিয় অংশগ্রহন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়। এই আন্দোলনে জনমত তৈরীতে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতামত তৈরীতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংবাদ সম্মেলনে বাসদ (মার্কসবাদী) নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন সকল চাষের জমিতে প্রয়োজনীয় পানি, গত বছর পানি না পাওয়ায় ক্ষতিগস্ত চাষীদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ, পানি না থাকায় তিস্তা পাড়ের বেকার মৎস্যজীবীদের কাজ ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচী সফল করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত্ব আহবান জানান হয়।

 

 

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments